না পড়লে মিস করবেন।
কবিতা --“ও মেয়ে তোর বয়স
কত ?”
ও মেয়ে তোর বয়স
কত ? কবিতাটি পড়তে ক্লিক করুন
যে দিন জন্মেছিলাম,
ঠাকুমা
তুলসী তলায় মাথা ঠুকেছিল,
গতরাতে
নিজের হাতে তৈরি নাড়ু
ফেলে দিয়েছিল গরুর ডাবায়।
বাবার মুখ
ছিল গম্ভীর
মায়ের
মুখে এক পাপবোধ।
প্রতিবেশীরা
সান্ত্বনা
দিয়ে বলেছিল,
পরেরবার,
নিশ্চয়ই ঠাকুর মুখ তুলে
চাইবে।
বুজেছিলাম,
আমি পরিবারে আনন্দ নিয়ে
আসি নি।
আমার বয়স এখন চার,
আজ আমার একটা ভাই
হয়েছে। সারা
বাড়ী
জুড়ে সে কি আনন্দ!
কেবল নাড়ু নয়,
বাবা মিষ্টি বিলি করেছে।
সব্বাই
বলছে, ভগবান এতদিন বাদে
মুখ
তুলে চাইল।
চার বছরের আমি শুধু
উত্তর পাই নি,
আমার জন্মের দিনটা কেন
অন্যরকম ছিল?
সেই আমি এখন ষোল
বছরের। ঠাকুমা,
বাবার
হুকুম হয়েছে আর স্কুল
নয়,
বই, খাতা, রঙ, পেনসিল
ছেড়ে এবার
শিখতে
হবে সংসারের কাজ। সময়
হয়েছে,
এ বাড়ী ছেড়ে
আর এক বাড়ী যাওয়ার।
ভাই স্কুলে যায়,
বাবার
ইচ্ছে ও যতদূর পারে
পড়ুক। আমার
কেন পড়া হবে না,
না, এর কোন উত্তর
পাই নি। আমার
বয়স
এখন আঠাশ।
বিয়ে
হয়ে গেছে এগারো বছর
আগে। একটি
মেয়ে,
একটি ছেলে।
মেয়ে
হওয়ার পড়, শ্বশুরবাড়ীর কেউ
কয়েকদিন
আমার সাথে কথা বলে
নি।
কেন? না এরও কোন
উত্তর পাই নি।
সেই
আমি আজ পঞ্চাশের গোড়ায়
বাপের
বাড়ীতে
এসেছি।
বাবার
আর কয়েক মুহূর্ত,
ভাই চাকরী করে
সময় পায় নি আসার।
শেষ সময়ে আমি দিয়েছিলাম
বাবার মুখে
দুফোঁটা
জল। সব্বাই
বলেছিল, লোকটার
কপাল খারাপ,
শেষ সময়ে ছেলের হাতের
জলটুকুও পেল
না।
আমার দেওয়া জলে দোষ
কোথায়, না, এরও
কোন উত্তর পাই নি। আমি
এখন
পঁচাত্তরের
বৃদ্ধা জীবনের শেষকটি ক্ষণ
আর বাকি। আমার
ছেলেটি বড় ব্যস্ত।
চারিদিকে
ছুটে বেড়াচ্ছে, লোক জোগাড়
করছে।
আর, আমার মেয়েটি
চুপচাপ,
নীরবে আমার পায়ের সামনে
বসে
আছে।
ওর যে কোন স্বাধীনতা
নেই। সমাজের
সকলের
মন জুগিয়ে যে ওকে চলতে
হয়।
নীরবে
দুচোখের কোণ দিয়ে কেবল
গড়িয়ে
পড়ছে
ফোঁটা ফোঁটা জল।
মেয়ে ছেলে
কেন এত তফাৎ
এর কোন উত্তর পাই
নি।
আমি আবার জন্মাতে চাই,
জন্মাতে চাই
একজন মেয়ে হয়ে।
পুরুষের চোখে জগৎ
দেখব বলে নয়, জগৎ
দেখব একজন মেয়ের
চোখে।••••••