"বিশ্বের
সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘হারমোনি অব দ্য সিস’।
বিস্ময়কর এ জাহাজ টাইটানিকের চেয়েও বড়
৩০৬ ফুট। দৈত্যাকার জাহাজটি সমুদ্রের বুকে যেন এক ভাসমান শহর। ১১৮৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২১৫.৫
ফুট প্রস্থের জাহাজটি দশতলা উঁচু ভবনের সমান। জাহাজটিতে আছে ১৮টি ডেক ও চারটি ফুটবল
খেলার মাঠ। ২ লাখ ২৭ হাজার টন ওজনের এ জাহাজে যাত্রী ধরবে ৬৭৮০ জন। আর এটি নির্মাণে
লেগেছে ৮০০ মিলিয়িন পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর মূল্যমান ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
হারমোনি অব দ্য সিস ফ্রান্সের সেন্ট-নাজাইরি থেকে ১৭ মে সকাল ৬টায় লন্ডনের ইংলিশ চ্যানেল
পাড়ি দিয়ে সাউদাম্পটনে পৌঁছেছে। উৎসুক জনতা জাহাজটি দেখতে ভিড় জমিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের
রয়েল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি জাহাজটি তৈরি করেছে। এতে আছে ২০টি ক্যান্টিন,
২৩টি সুইমিংপুল ও ৫২টি গাছ, ক্যাসিনো, মদের দোকান, ২৭৪৭টি কেবিন ও নানান সুযোগ-সু্বিধা।
জাহাজের নাবিক আছে ২১০০ জন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ হারমোনি অব দ্য সিস। দৈর্ঘ্য ১১৮৮
ফুট ও প্রস্থ ২১৫.৫ ফুট। ফ্রান্সের সেন্ট-নাজাইরি থেকে ১৭ মে জাহাজটি লন্ডনের ইংলিশ
চ্যানেল পাড়ি দিয়ে সাউদাম্পটনে পৌঁছেছে। জাহাজটি এখন সাউদাম্পটনের ঘাটে বাঁধা আছে।

সেখান থেকে জাহাজটি প্রথম যাত্রা করবে। জাহাজটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ২ বছর ৮ মাস।
রোদ্রজ্জ্বল ছবিতে হারমোনি অব দ্য সিস। জাহাজটির ওজন ২ লাখ ২৭ হাজার টন।প্রথম যাত্রায়
সমুদ্র উপকূলের নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছে। প্রথম ভ্রমণটি
অবশ্য বিনা টিকিটেই করতে পারবেন যাত্রীরা। এরপর পর থেকে যাত্রীদের টিকিট কিনতে হবে।
গেল শনিবার লন্ডনের সাউদাম্পটন থেকে নেদারল্যান্ডের রটারডাম পর্যন্ত চারদিনের একটি
ভ্রমণের আয়োজন করেছে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৯ মে জাহাজটি বার্সেলোনা ভ্রমণের মাধ্যমে
প্রথম বাণিজ্যিক ভ্রমণ শুরু করবে। এ যাত্রায় ৩৪ দিনে বার্সেলোনা পৌঁছাবে জাহাজটি। শরৎকালে
জাহাজটির রুট হবে যুক্তরাষ্টের ফ্লোরিডা হয়ে ভূমধ্যসাগরের কাছাকাছি দেশগুলো। আর শীতকালে
ক্যারিবিয়ান দেশগুলো। জাহাজটি ৭৭টি দেশ থেকে যাত্রী তুলতে পারবে।এমন একটি জাহাজ যা
শুধু যাত্রীই বহন করে না, সমুদ্রের সৌন্দর্যও বাড়ায়। টাইটানিক এর কাছে একটি মাছের পোনার
মতো। জাহাজটির নিরাপত্তায় রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। বিশাল ১০ তলা রাক্ষুসে জাহাজ।
ছবিটি জাহাজের পেছন দিক থেকে তোলা।পুরো জাহাজটি ঘুরে মার্ক পামার নামের এক সাংবাদিক
বলেন, “আমি এখন জাহাজটির ১৭ নম্বর কেবিনে দাঁড়িয়ে আছি। এত বড় জাহাজ দেখে আমি অভিভূত।
চারিদিকে স্বচ্ছ কাঁচের দেয়াল, মাঝে মাঝে পরিস্কার স্টিল চোখ জুড়িয়ে দেয়।‘সবার আগে ক্যারিবিয়ান
ইন্টারন্যাশনাল জাহাজটি ভ্রমণের জন্য আমাকে অভ্যর্থনা জানায়।
এর বিশেষত্বের দিক থেকে প্রথমে
বলতে হবে যাত্রী ধারণক্ষমতা
সম্পর্কে। বিশ্বের
সর্বাধিক যাত্রী ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ভ্রমণ
জাহাজ এটি। বিশ্বের
সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জেট
এয়ারবাস A380 -তে সিটের সংখ্যা
পাঁচশো ২৫টি। তুলনা
দিতে গেলে বলা যায়,
হারমনি অব দ্য সিস
তার চেয়েও দশগুণ বেশি
যাত্রী বহন করতে পারবে। দ্রুততার
দিক থেকে জাহাজটি ঘণ্টায়
২৫ কিলোমিটার বেগে ছোটে।
এতে রয়েছে মোট ১৮টি
ডেক। এর
মধ্যে ১৬টি ডেকে রয়েছে
দুই হাজার সাতশো ৪৭টি
কেবিন। যা
কিনা বর্তমানে যেকোনো জাহাজের চেয়ে
অনেক বেশি। এটি
এত বড় যে যাত্রীরা
যাতে হারিয়ে না যান
সেজন্য তাদের জিপিএস (গ্লোবাল
পজিশনিং সিস্টেম) ব্যবহার করতে হবে।
দু’টি তলা নিয়ে
বিস্তৃত জাহাজের সিগনেচার রুমটি রয়েল লফট
স্যুট বলে পরিচিত।
রয়েল লফট স্যুটের প্রথম
তলায় রয়েছে এক হাজার
ছয়শো স্কয়ার ফুটের একটি
লিভিং স্পেস। অন্যদিকে
আটশো ৭৪ স্কয়ার ফুটের
দ্বিতীয় তলাটি শহরের বড়
কোনো অ্যাপার্টমেন্টের চেয়েও অনেক বড়।
হারমনি
অব দ্য সিস যেহেতু
একটি ভ্রমণ জাহাজ সেহেতু
এখানে ছুটি কাটাতে আসা
যাত্রীদের আনন্দযাপনে যেনো এতটুকু অসুবিধা না হয়
তাই বিশ্বের ৮০টি দেশ থেকে
প্রায় দুই হাজার একশো
জন কর্মচারী তাদের সেবায় নিয়োগ
দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও
সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ কেবিনে যারা থাকবেন
তাদের সেবায় থাকবে রয়েল
জেনিস উপাধির খানসামা।
এরা অতিথিদের মালপত্র খুলতে ও গোছাতে
অতিথিদের সাহায্য করবে।
চিত্তবিনোদন,
কেনাকাটা ও শরীরচর্চার জন্য
রয়েছে খেলার জায়গা, কমেডি
ও জ্যাজ ক্লাব,
বুটিক শপ, সি স্পা
ও ফিটনেস সেন্টার, ইয়োথ
জোন, ২৩টি সুইমিংপুল, স্পের্টস
জোন ও সেন্ট্রাল পার্ক।
জাহাজের
মধ্যখানে অবস্থিত সেন্ট্রাল পার্কে রয়েছে সাড়ে
দশ হাজারের বেশি উদ্ভিদ, ৪৮টি
অাঙুরগাছ ও ৫২টি বড়
গাছ। এগুলোর
কোনো কোনোটি ২০ ফুট
পর্যন্ত লম্বা।
Read More...